Skip to content

রেমিট্যান্স মানে কি?প্রবাসী আয়ের অর্থনীতি – Uddin

  • by

স্বল্প উন্নয়ন দেশগুলো নির্ভর করে রেমিট্যান্স এর উপর। বাংলাদেশ অর্থনীতি উন্নয়নে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে প্রবাসীর আয়। বিগত বছরে প্রায় ২৬.৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এসেছে শুধুমাত্র রেমিট্যান্স থেকে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে রেমিট্যান্স এসেছে ২২.৪৪ শতাংশ।

বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আছে ৭ম স্থানে। যদি দেশে ডলার না আসে না হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতী তমেন উন্নয়ন হবে না। ডলার না থাকলে আমরা কোন কিছু আমদানি করতে পারবো না। বিগত সরকার রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সম্মান করতো না, তাদের পাঠানো টাকা বাহিরে পাচার করতো। দেশকে করেছে অস্থিতিশীলতা দিন বা দিন আমাদের মূল্যস্ফতি বেড়েই চলেছে।

তবে আমাদের জন্য বড় সুখবর, হচ্ছে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর এর রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসিরা। যার মূল্য ২.৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এই আয় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে। এটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে সহায়ক।

রেমিট্যান্স মানে কী?রেমিট্যান্স হলো প্রবাসে কর্মরত ব্যক্তিদের দ্বারা পরিবারের বা স্বজনের কাছে পাঠানো অর্থকে রেমিট্যান্স বলে। এটি সাধারণত বৈদেশিক মুদ্রায় পাঠানো হয় এবং প্রাপকের দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়। মনে করুন আপনার পরিবারের কেউ সৌদিআরবে আছে, তার দ্বারা পাঠানো অর্থই হলো রেমিট্যান্স সেটা বিদেশ থেকে রিয়াল হিসেবে পাঠানো হয় বাংলাদেশ এসে এটা টাকাতে কনবার্ট করে আপনার কাছে আসে।

রেমিট্যান্স থেকে সরকারের আয়?

রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে ভূমিকা রাখে। আমাদের দেশে টাকা আছে তবে ডলার নেই। বিদেশ থেকে কিছু আমদানি করতে হলে ডলার প্রয়োজন,এই ডলার কোথায় থেকে আসে। এই ডলার আসে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করলে বা বৈদেশিক মুদ্রা মাধ্যমে এই ডলার আমাদের রাজস্ব যুক্ত হয়।আমরা বাজারে গেলে দোকানদারকে ডলার দি না, আমরা দোকানদার কে টাকা দিয়ে জিনিসপত্র ক্রয় করি।সরকার ডলারের বিনিময়ে আমাদের কে টাকা দেয়, এই ডলার সরকারের কাছে রিজার্ভ রেখে দেয়।

আরও পড়তে পারেন: মাসিক আয় বলতে কি বুঝায়: কিভাবে পরিচালনা করবেন

এই অর্থ আমদানি খরচ মেটানো, ঋণ পরিশোধ এবং উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যবহৃত করা হয়। সরকারের কাছে ডলার না থাকলে দেশের অর্থনীতি অচল হয়ে পড়ে। যত ডলার থাকবে সরকার এবং জনগণ এর জন্য উপকৃত হয়। মূলত এটাই সরকারের লাভবান হয়।

রেমিট্যান্স কত প্রকার এবং কী কী?

রেমিট্যান্স প্রধানত ৩ ধরনের হতে পারে:

  1. ব্যক্তিগত রেমিট্যান্স।
  2. ব্যবসায়িক রেমিট্যান্স।
  3. ফ্রিল্যান্সিং রেমিট্যান্স।

ব্যক্তিগত রেমিট্যান্স: প্রবাসীদের পরিবারের জন্য পাঠানো টাকাই হলো ব্যাক্তিগত রেমিট্যান্স।এই রেমিট্যান্স আয় করার জন্য আমাদের দেশ থেকে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায় যাতে তাদের পরিবার উন্নত জীবনযাপন করতে পারে। আপনার আশেপাশে খোঁজ নিলে দেখতে পারবেন কেউ না কেউ প্রবাসে কর্মরত আছে।সত্যি বলতে তারা নিজেদের উন্নত জীবনযাপন জন্য বিদেশে পাড়ি জমায় ঠিক দেশের উন্নয়নের তাদের ভূমিকা বড়।

ব্যবসায়িক রেমিট্যান্স: বিদেশে ব্যবসা বা বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়।বাংলাদেশ থেকে অনেক কিছু রপ্তানি করে বিদেশে তার মধ্যে অন্যতম হলো কাপড়। বাংলাদেশের গামেন্টেস অনেক বড় ভূমিকা রাখে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার জন্য।বাংলাদেশের কাপড় সারা বিশ্বে খুব পরিচিতি। এখান থেকে অর্জিত পুরো টাকায় রেমিট্যান্স হিসাবে আসে শুধু এটা না বাংলাদেশের অনেক বিনিয়োগ আছে বিদেশে সেখান থেকেও অর্জিত টাকাও রেমিট্যান্স হিসাবে ধরা হয়। অনেকে শেয়ার বাজারে নাম শুনেছেন, শেয়ার বাজারে থেকে অর্জিত টাকাও সোনারখনি হিসাবে দেশে ঢুকে।

ফ্রিল্যান্সিং রেমিট্যান্স: ফ্রিল্যান্সিং নাম শুনেন নাই এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কেউ ডিজিটাল মার্কেটিং করে আবার কেউ গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মাধ্যমে ইনকাম করে দেশের অর্থনীতি চাকাকে সচল রাখতেছে।এমাউন্ট হিসেবে এটা বেশি না তবে অর্থনীতিতে এটা খুব কাজে আছে। এটা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে আসে। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং অনেক জনপ্রিয় একটা মাধ্যমে আপনি চাইলে এখনই শুরু করতে পারে।

রেমিট্যান্স অর্থনীতি বলতে কী বোঝায়?

রেমিট্যান্স অর্থনীতি বলতে সেই অর্থনীতিকে বোঝায় যা প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ওপর নির্ভরশীল। এটি দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করে।

বর্তমান সময়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম অনেক সহজ হয়েছে। প্রবাসীরা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল টাকা পাঠাতে পারে। মানি ট্রান্সফার সার্ভিস, বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন। এটি দ্রুত, সুরক্ষিত এবং নির্ভুল পদ্ধতি। এটার মাধ্যমে টাকা পাঠালে সরকার উপকৃত হয়, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে দেশ বা জাতি কেউ উপকৃত হয় না শুধুমাত্র উপকৃত হয় বিদেশে টাকা পাচারকারীরা। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে একটু সময় লাগে টাকটা হাতে পেতে তবে ১০০% সিকিউরিটি পাবেন আপনার টাকার।

বাংলাদেশ ও রেমিট্যান্স?

আমরা জানি প্রবাসে কর্মরত নাগরিকদের স্বদেশে প্রেরিত অর্থকে রেমিট্যান্স বলে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২৬.৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।এর আগে এত বড় এমাউন্ট দেশে আসে নাই।শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসেই ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার এসেছে। এক মাসে এত বড় টাকা ভাবা যায়।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স প্রেরণ করেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), যুক্তরাষ্ট্র এবং মালয়েশিয়ায় কর্মরত প্রবাসীরা। এর মধ্যে সৌদি আরবের অবদান সবচেয়ে বেশি।

সর্বশেষ,

রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকা শক্তি। এটি শুধু প্রবাসী পরিবারের জীবনমান উন্নত করে না, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো এবং প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব হওয়া উচিত।

আপনার মতামত বা অভিজ্ঞতা জানাতে ভুলবেন না! আমাদের টেলিগ্রাম জয়েন করতে ভুলবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *