Skip to content

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ কি কি?

  • by

ক্ষুদ্র ব্যবসা এমন এক ধরনের উদ্যোগ, যা শুরু করতে বেশি মুনাফা প্রয়োজন হয় না।সাধারণত কম মূলধন, স্বল্প আকারে পরিচালিত হয় এবং সীমিত সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ করে। ক্ষুদ্র ব্যবসা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার সম্ভাবনাকে বাড়াতে পারবেন।

এই আর্টিকেলে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধাপগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

ক্ষুদ্র ব্যবসা কাকে বলে? (What is a Small Business)

ক্ষুদ্র ব্যবসা হলো একটি ছোট পরিসরে পরিচালিত উদ্যোগ, যেখানে কম সংখ্যক কর্মী এবং স্বল্প মূলধন দিয়ে শুরু করে পরবর্তীতে বড়সড় আকারে শুরু করা।

যে কোন ব্যবসা শুরু করতে ছোট্ট আকারে শুরু করা। বড় আকারে ব্যবসা শুরু করতে ছোট আকার দিয়ে শুরু করতে হবে।

ক্ষুদ্র ব্যবসার বৈশিষ্ট্য:

  • কম পুঁজি।সীমিত বিনিয়োগ
  • স্বল্প পরিসরের কার্যক্রম।
  • স্বাধীন মালিকানা।
  • কম সংখ্যক কর্মচারী।
  • স্থানীয় বাজারে নির্ভরশীলতা।
  • সাধারণত ব্যক্তি মালিকানায় পরিচালিত।
  • নিম্ন প্রযুক্তি ব্যবহার।
  • দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
  • উৎপাদন।
  • ঝুঁকির মাত্রা কম।
  • স্থানীয় গ্রাহকদের চাহিদা মেটানো ।

ব্যবসা শুরু করার আগে যা জানতে হবে (Things to Know Before Starting a Business)

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা প্রয়োজন। এসব বিষয় না জানলে ব্যবসা সঠিক পথে পরিচালনা করা যায় না।

বাজার গবেষণা করা: আপনি দেশি মুরগী খামার করতে চাচ্ছেন তাহলে আপনাকে স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা কেমন সেটা দেখতে হবে। দেশি মুরগী খামার খুব লাভজনক তবে এটা বিক্রি করতে অনেক কষ্টকর হয়। দেশি মুরগী এবং সোনালী মুরগী দেখতে প্রায় সেমিলার।

আপনি উৎপাদন করে সেটা বাজারজাত করতে না পারলে আপনার ক্ষুদ্র ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবেন না।সঠিক বাজার কোথায় সেই বাজারে গ্রাহকদের চাহিদা কী, তা বিশ্লেষণ করুন।চাহিদা ভালো হলে তারপর উৎপাদন করুন বেশি। উৎপাদন করে সেটা বিক্রি করতে না পারলে উৎপাদন করা উচিত নই।

আরও পড়তে পারেন:

ঢাকা শহরে ব্যবসার আইডিয়া? অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা

ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা: বাংলাদেশে শুরু করার সেরা ব্যবসার আইডিয়া

প্রতিযোগিতা বিশ্লেষণ করুন: আপনার প্রতিযোগীরা কীভাবে কাজ করছে, তাদের শক্তি ও দুর্বলতা বিশ্লেষণ করুন। আপনি যদি একজন খামারি হলে আপনার আশেপাশে অন্য খামারে ভিজিট করুন। সে-ই খামারে উৎপাদন কেমন করে হচ্ছে, উৎপাদন খরচ কেমন, খামারে কি রকম মুরগী আছে, কোন কোন জাতের মুরগী পালন করতেছে, তার বাজারজাত কি করে করিতেছে ইত্যাদি সব দেখতে হবে।বাজারে কত টাকা সেল করতেছে এসব রিসার্চ করে শুরু করা উচিত। হুট করে কোন খামার বা ব্যবসা করা উচিৎ না।

আইনি কাঠামো জানুন: আপনার ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স, নিবন্ধন এবং কর সংক্রান্ত তথ্য জেনে নিন। বাংলাদেশ আইন সম্পর্কে জেনে শুরু করুন। প্রয়োজন হলে একটা এডভোকেট এর সহোযোগিতা নিতে পারেন। বিনা লাইসেন্স শুরু করলে ভবিষ্যতে ঝামেলা পড়তে পারেন।

অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তৈরি করা: আপনার প্রাথমিক খরচ, আয় এবং সম্ভাব্য লাভ সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করুন। টাকা কোথা থেকে যোগাড় করবেন, লোন নিবেন কোথায় থেকে সব পরিকল্পনা রেডি করে ফেলুন।

খামারে অবকাঠামো তৈরি করতে কত টাকা খরচ হবে সব তৈরি করে ফেলুন। এটা করলে আপনার বাজেটের মধ্যে খামার করতে পারবেন। আপনার জেলায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের গিয়ে প্রশিক্ষণ এবং লোন নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন।

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধারাবাহিক ধাপসমূহ

ব্যবসার ধারণা নির্বাচন করুন: আপনার আগ্রহ, দক্ষতা এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসার ধারণা বেছে নিন। যে ব্যবসা করবেন সেটা সম্পর্কে ধারণা নিন। বাড়িতে মুরব্বি থাকলে তাদের থেকে পরামর্শ নিন। তাদের বলুন আমি এই ধরনের ব্যবসা করতে চাচ্ছি করলে কেমন হবে ধারণা নিন। দেখবেন তারা আপনাকেও সহোযোগিতা করবে।ফাইন্যন্সিয়াল ভাবে।

মুরগীর খামার করবেন এমন না, যে কোন ব্যবসা করতে পারেন। গ্রাম থেকে তরকারি এনে শহরে বিক্রি করা। এমন ধরনের ব্যবসা লাভজনক, চাইলে যে কেউ করতে পারে।

শুধু এটা না, আপনি খামার না করে ও, খামারিদের থেকে মুরগী এনে বাজারে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।

বিজনেস প্ল্যান তৈরি করুন: একটি ভালো বিজনেস প্ল্যান তৈরি করুন যা আপনার ব্যবসার লক্ষ্য, কার্যপ্রণালী এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ করবে।

কি করে শুরু করবেন,টাকা কোথা থেকে পাবেন, ব্যবসা বাজর জাত করণ, কত টাকা লাভ হবে, কত টাকা ইনভেস্ট করলে ভালো। একটা ভালো বিজনেস নিচে দেওয়া হলো এখান থেকে একটা আইডিয়া নিয়ে শুরু করতে পারেন।

ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর বিজনেস প্ল্যান তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। নিচে ধাপে ধাপে একটি সাধারণ ব্যবসা পরিকল্পনার কাঠামো দেওয়া হলো:

ব্যবসার নাম নির্ধারন করা আপনি যদি খাদ্য ডেলিভারি ব্যবসা করতে চান তাহলে এই ধরনের নাম রাখতে পারেন, Uddin কিচেন ডেলিভারি

ব্যবসার ধরন: খাদ্য সরবরাহ সেবা

উদ্দেশ্য: স্থানীয় গ্রাহকদের স্বাস্থ্যকর খাবার সরবরাহ।

লক্ষ্য: প্রথম বছরে ৫০-৬০ জন নিয়মিত গ্রাহক অর্জন।

প্রাথমিক বিনিয়োগ: ২-৩ লাখ টাকা।

প্রতিযোগী: স্থানীয় খাবারের দোকান ও ফাস্টফুড চেইন।

টার্গেট মার্কেট: স্থানীয় কর্মজীবী এবং শিক্ষার্থীরা।

মাসিক আয়ের সীমা: ১৫,০০০-৩০,০০০ টাকা।

মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি

ব্র্যান্ডিং: ব্যবসার লোগো এবং ট্যাগলাইন।

প্রচার মাধ্যম: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Facebook, Instagram)। ফ্লাইয়ার এবং লোকাল বিজ্ঞাপন। স্থানীয় গ্রুপ এবং ফোরামে প্রচার।

ঝুঁকি বিশ্লেষণ : খাদ্যের মান বজায় রাখতে ব্যর্থতা।

  • বাজারে নতুন প্রতিযোগীর আগমন।
  • সরবরাহ চেইন সমস্যায় পড়া।
  • ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা :
  • প্রথম ৬ মাসে নিয়মিত গ্রাহক বাড়ানো।
  • একটি নতুন এলাকা বা শাখা খোলা।
  • অনলাইন অর্ডারিং অ্যাপ চালু করা।
  • ১০% ডিসকাউন্ট প্রথম অর্ডারে।

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার ধাপ কয়টি? ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার জন্য নিদিষ্ট কোন ধাপ নাই। শুরু করুন আপনার মন মতো করে উপরে উল্লেখিত ধাপগুলো মেনে শুরু করলে আপনি ভালো মতো শুরু করতে পারবেন। প্রতিটি ধাপ ধৈর্য এবং মনোযোগ দিয়ে সম্পন্ন করা হলে সফলতার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাই।

সর্বশেষ,

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ মনে হতে পারে। তবে সঠিক পরিকল্পনা এবং ধাপে ধাপে এগিয়ে গেলে এটি সহজ এবং লাভজনক হতে পারে। আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, বাজার বুঝুন, এবং ধৈর্যের সাথে কাজ করুন। সফলতা নিশ্চিত হবে। আপনার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না-হওয়া পযন্ত আপনি অনড় থাকবেন, দেখবেন সফলতা আপনার কাছে ধরা দিবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন যদি এটি উপকারী মনে হয়।আমাদের টেলিগ্রাম জয়েন করতে ভুলবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *