Skip to content

মাসিক আয় বলতে কি বুঝায়: কিভাবে পরিচালনা করবেন

  • by

আমাদের দৈনন্দিন জীবন অনেক’টাই আমাদের মাসিক আয় এর ওপর নির্ভর করে। এটি আমাদের জীবনযাত্রার মান নির্ধারণ করে, আমাদের প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে সাহায্য করে, এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় ও বিনিয়োগের পথ খুলে দেয়। কিন্তু, মাসিক আয়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা না করলে এটি আমাদের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আজকের ব্লগে, আমরা মাসিক আয় সম্পর্কে জানবো, কীভাবে সঠিকভাবে এটি পরিচালনা করতে হবে এবং আমাদের আর্থিক লক্ষ্য পূরণের উপায়।

মাসিক আয় কি? (What is Monthly Income?)

মাসিক আয় বলতে বোঝানো হয় সেই আয় যা একজন ব্যক্তি প্রতি মাসে যা উপার্জন করে থাকে। এই আয় বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে,আপনার চাকরি বেতন থেকে হতে পারে অথবা আপনার ব্যবসা থেকে ও হতে পারে।

বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং আয় হচ্ছে অনলাইন আয়ের বড় উৎস। এটা মাসিক কিংবা দৈনিক হিসাব করা যায় না। আপনি যখনই কাজ করবেন তখনই আপনার ইনকাম হবে। এই আয়কে আপনার মাসিক আয়ের পরিকল্পনায় রাখতে পারেন।

মনে করুন আপনি একটা জবে আছেন, আপনি চাচ্ছেন আপনার আরও কিছু করার প্রয়োজন তার জন্য সেরা চয়সে হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়।

আপনি এটাও করতে না চাইলে আপনার জন্য আরও বেষ্ট চয়েস হতে পারে। বিনিয়োগ। আপনি যে কোন জায়গায় বিনিয়োগ করতে পারেন। শেয়ার বাজার,মিউচুয়াল ফান্ড বিন্যান্স ইত্যাদি। এসব জায়গায় বিনিয়োগ করেও আপনি মাসিক আয়টা বাড়াতে পারেন।

আরও পারেন সেটা হলো প্যাসিভ ইনকাম, সেটার জন্য বেস্ট চয়সে হতে পারে ব্লগ, ইউটিউব বা বই লেখা কিংবা পন্যার রিভিউ লিখে আয়।আপনি আয় করতে পারবেন যে কোন মাধ্যমে থেকে। যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা করতে পারেন তাহলে।

মাসিক আয়ের গুরুত্ব (Importance of Monthly Income)

আপনি কি জানেন মাসিক আয় সঠিকভাবে পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করতে পারলে আপনার জীবনের আর্থিক অবস্থা অনেকটা উন্নয়ন হবে। মান্থলি আয় সঠিকভাবে পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ উপায়:

  • ব্যক্তিগত বাজেট তৈরি: মাসিক আয় জানলে আপনি আপনার খরচ সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারেন। বাজেট হলো বড় একটা সমস্যা সমাধান। আপনি যদি জানেন আপনি মাসিক আয় ৩৫ হাজার টাকা আপনার বাজেট তৈরি করলেন ৪০ হাজার টাকা তাহলে তো আপনার পুরো পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে যাবে।বাজেট তৈরি করার আগের আপনার আয় কত সেটা হিসেবে পরিকল্পনা করে তৈরি করা উওম।
  • ঋণ পরিশোধ: ঋণ পরিশোধের জন্য মাসিক আয়ের ওপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা করা যায়। এটা সবার জন্য না।সব মানুষের ঝণ থাকে না, অনেকের ঝণ আছে বিশেষ করে সরকারি কর্মকতাদের। তারা বাড়ি করার জন্য ঋণ নিয়ে নেয়। অনেক মিডল ক্লাস ঋণ নেই শুধুমাত্র বাড়ি করবে শেষ বয়সে এসে। এটার জন্য তার উপযুক্ত পরিকল্পনা না থাকলে সব কিছু নষ্ট হয়ে যাবে।চেষ্টা করুন ঋণ না নেওয়ার জন্য। ঋণ মানুষকে বিপদে ফেলে যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে না পারলে।
  • সঞ্চয় ও বিনিয়োগ: মাসিক আয়ের কিছু অংশ সঞ্চয়ে রাখতে হবে ভবিষ্যতের জন্য। টাকা আয় করলাম খরচ করে ফেললাম এটা করা যাবে না। আপনি যদি আয়ের করার সাথে সাথে যদি নিজের জন্য কিছু সেভিং করে রাখেন তাহলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। আপনার আয়ের ১২.৫% যদি সঞ্চয় করেন তাহলে আপনার জীবন পরিবর্তন হবে অনায়াসে।আপনি হয়তো ভাবতেছেন ১২.৫ সঞ্চয় দিয়ে কি হবে। অনেক কিছু হবে যদি বছর শেষে হিসাব করি তাহলে। ছোট ছোট পদক্ষেপ আমাদের জীবনে মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারে।
  • খরচ সঠিকভাবে ট্র্যাক করুন: প্রতিদিনের খরচ এবং মাসিক খরচ লিখে রাখুন, যাতে আপনি অনাকাঙ্ক্ষিত খরচ কমাতে পারেন। মনে রাখবেন আয়ের চাইতে যেন ব্যায় বেশি না হয়। আয় আর ব্যায় সবসময় একই থাকে। আপনি কতটাকা খরচ করতেছেন সেটা আপনি খাতায় লিখে রাখুন, কোন জিনিসে কত টাকা খরচ হচ্ছে সেটার ও হিসাব রাখুন।
  • বিনিয়োগ : সবচেয়ে ভালো হয় যদি বিনিয়োগ করা যায়। ছোট ছোট বিনিয়োগ আপনার ব্যবসার মোড় পরিবর্তন করতে পারে। আর্থিক স্বাধীনতা আনতে চান তাহলে এসবের বিকল্প নাই।

মাসিক আয়ের উৎস কি কি হতে পারে?

মাসিক আয়ের বিভিন্ন উৎস হতে পারে। অফলাইনে বা অনলাইনে ইনকাম থাকতে পারে। আপনি চাকরি করলে এটাও হতে পারে আয়ের একটা মাধ্যমে। ঘরবাড়া, বা ব্যাবসা থেকেও হতে পারে আয়ের মাধ্যম।

বেতন/সেলরি এটি সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রধান আয় উৎস। এটি নিয়মিত এবং নির্ধারিত পরিমাণে আসে।চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে পার্টটাইম আয় করা যেতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন কাজ হতে পারে, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি এই কাজ গুলোর চাহিদা বেশি।

ব্যাবসা হতে পারে আরেকটি আয়ের উৎস। আপনি চাকরি না করে ও নিজেই উদ্যেক্তা হতে পারেন। আপনি চাইলে পশু-পাখীর খামার করে ও আয় করতে পারেন এটার জন্য বেষ্ট হলো দেশি মুরগী পালন এটাও আয়ের একটা ভালো মাধ্যম। প্রথমে ৫০ টা মুরগী দিয়ে শুরু করতে পারেন পরবতীতে আয় ব্যায়ের হিসাবে করে আপনি মুরগির সংখ্যা বাড়াতে পারেন।

মাসিক আয়ের হিসাব কিভাবে করবেন? (How to Calculate Monthly Income?)

মাসিক আয় হিসাব করার জন্য আপনাকে সমস্ত আয় যোগ করতে হবে এবং খরচ থেকে বাদ দিতে হবে। মনে করুন আপনি চাকরি করেন সেখান থেকে মাসিক আয় হয় ২৫ হাজার টাকা কিংবা আরও বেশি। চাকরি পাশাপাশি আপনি মুরগী পালন করেন সেখান থেকেও আপনার কিছু আয় হয়, আপনার বাসাবাড়ির থেকেও আয় আসে ছোটখাটো একটা আয়।

মাসিক আয় পরিচালনা

এখানে একটা আয়ের হিসাব দেখানো হলো।

মোট আয়ের হিসাব:
বেতন: ২৫,০০০ টাকা
ফ্রিল্যান্সিং আয়: ১০,০০০ টাকা
প্যাসিভ ইনকাম: ৫,০০০ টাকা
অন্যান্য আয় : ৩,০০০ টাকা
মোট আয়: ২৫,০০০ + ১০,০০০ + ৫,০০০+৩০০০ = ৪৩,০০০ টাকা

মাসিক খরচ:
যদি বাড়ি ভাড়া দিতে হয় তাহলে
বাসা ভাড়া: ১০ -১২ হাজার টাকা

খাবার ও অন্যান্য খরচ: ১৫,০০০- ২০,০০০ টাকা

মোট খরচ: ১২,০০০ + ২০,০০০ = ৩২,০০০ টাকা। আরি বাকি আছে ১১ হাজার টাকা এটা দিয়ে আপনি সঞ্চয় করতে পারেন।

নেট আয়: ৪৩,০০০ – ৩২,০০০ = ১১,০০০ টাকা

সর্বশেষ,

মাসিক আয় আমাদের জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সঠিকভাবে মাসিক আয়ের হিসাব রাখা এবং পরিকল্পনা করা আপনাকে আপনার আর্থিক লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে। এটি আপনার সঞ্চয় বাড়াতে, বিনিয়োগ করতে, এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই মাসিক আয়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা শুরু করুন এবং একটি সুষ্ঠু আর্থিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন!

আপনার কোন মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *